আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই ছাত্রলীগ ধর্ষণের মহড়া শুরু করে

৭১ এ যারা ধর্ষণ করেছে, সেই জামাত শিবির ক্ষমতার স্বাদ নিয়েছে বিএনপির সাথে মিলে। কিন্তু তাদের সেই পুরনো অভ্যাসটা নতুন করে দেখিনি, দেখেনি বাংলাদেশ। কিন্তু--------------------যারা দুধে ধোয়া পুত পবিত্র চরিত্রের অধিকারী, তারা কেন জামাত শিবিরের সেই খাসলত প্রেকটিসে ব্যস্ত? বলছি আওয়ামীলীগের কথা।

আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই ছাত্রলীগ ধর্ষণের মহড়া শুরু করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসব করেছিল। তখন তিরস্কৃত হলেও ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়া হয়েছে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ যা করছে তা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ধর্ষণের সেঞ্চুরি উৎসবকেও হার মানাচ্ছে । যে দলের নেতারা প্রায় প্রতিদিনই একাত্তরে নারী ধর্ষণের কথা বলেন, তাদের লোকরাই যখন ধর্ষণের রেকর্ড গড়ে, তখন মানুষের মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক-তাহলে এরাই কি পাকিস্তানীদের উত্তরসূরী?

ছাত্রলীগের ধর্ষণের ইতিহাসে আরো একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্য দিলো টাঙ্গাইলের ছাত্রলীগ নেতারা। টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার পৈশাচিকতা শুধু ধর্ষণ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তারা উল্লাস প্রকাশ করেছে।

পিরোজপুরে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের সময় ভিডিওচিত্রে সেই অশ্লীল দৃশ্য ধারণ করে ছাত্রলীগ ক্যাডার আহসান কবীর মামুন। জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আহসান কবীর মামুনওই ছাত্রীকে ধর্ষণের সময় তার বন্ধুদের দিয়ে ভিডিও চিত্রটি ধারণ করেই ক্ষান্ত হয়নি পরে তা সিডি করে বাজারজাত করা হয়।

গত জুলাই মাসে ফরিদপুরের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে মোবাইল ফোন, ভিডিও সিডি আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

গত ১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় যশোরে দশম শ্রেণীর এক মুসলমান ছাত্রীকে সিঁদুর পরিয়ে ধর্ষণ করেছে শিশির ঘোষ নামক এক যুবক। শিশির ঘোষ স্থানীয়আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে একই গ্রামের মাসুদ ও ইজাজুল স্থানীয় মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে মহিউদ্দিন নামক এক ব্যক্তির পুকুরপাড়ে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ধর্ষণের চিত্র মোবাইল ফোনের ভিডিওতে ধারণ করা হয়। পরে তা সিডি আকারে বাজারে ছাড়া হয়। এই ধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িতরাও সরকারি দলের লোক।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় পূজামন্ডপ থেকে ফেরার পথে এক কিশোরীকে অপহরণ করে ছাত্রলীগের ১০ কর্মী পালা করে ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার সদরঘাটে ১১ বছরের এক কিশোরীকে ৫ জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একটি ফাঁকা লঞ্চে ডেকে নিয়ে ভিক্ষুক কিশোরীকে ধর্ষণের পর অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৭নং ওয়ার্ডে ওই কিশোরীকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার নোয়াপাড়ায় চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় গত ১ সেপ্টেম্বর অপহরণ করা হয়। ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে লাশ গোয়ালঘরের মাটিতে পুঁতে রাখে ধর্ষকরা। পুলিশ ও গ্রামের মানুষ গত ৩ অক্টোবর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মানিক ও সুজন নামে দুই সহোদরসহ তাদের মাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ পরিবারটিও সরকারি দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে ১০ই এপিওল দিনে-দুপুরে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগের দুই কর্মী। ক্যাম্পাসের ভিতরেই ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন।

গত ৯ মাসে সারাদেশে ধর্ষণের শিকার হয় মোট ৪১২ জন। যার মধ্যে ২৩৩ জন নারী ও ১৭৯ জন শিশু। গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৮ টি । উল্লেখ্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনপুষ্ট ছাত্রলীগ জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় একজন গৃহবধু এএসআই কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন, যশোরে এক গৃহবধু আনসার সদস্য ও জয়পুরহাটে ৮ বছরের এক শিশু গ্রামপুলিশের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন।

২১ এপ্রিল পটুয়াখালীতে বাহাদুর নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর নেতৃতে ৬/৭ জন যুবক একজন গৃহবধুকে ধর্ষণ করে।

২২ এপ্রিল ভোলার লালমোহনের কচুয়াখালী গ্রামে বিএনপি কর্মী শফি মাঝির স্ত্রী ও মেয়েকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে ।

ভোলায় উপনির্বাচনের পরদিন যুবলীগ নেতা সিরাজ মিয়া বিএনপি সমর্থিত নান্নু মেম্বারের ভাতিঝা রুবেলের স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।

১৩ মে সিলেট পলিটেকনিকে ছাত্রলীগ নেতা সৈকত শ্রেণীকক্ষে এক ছাত্রীকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সোনাইকান্দি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন রেজার পুত্র পান্না (২২) তার একজন সহযোগীকে নিয়ে স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলাকে (৪০) ধর্ষণ করে।

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার দুর্গম কেয়াংঘাট এলাকায় ১৫ মে ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসীরা কল্পনা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২৫ মে লালমনিরহাটে শরিফাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে এসিডে শরীর পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

২৯ মে নারায়নগঞ্জে চাচাকে গাছের সাথে বেধে রেখে ২ ভাতিজীকে গণধর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।

জুন মাসে লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের খাদ্য পরিদর্শক শফিউল আলম ১২ বছরের কিশোরী গৃহপরিচারিকা দুলালীকে ধর্ষণ করলে তার মৃত্যু হয়।

৩ জুন শরীতপুরের প্রবাসীর স্ত্রীকে ৫-৭ জন সন্ত্রাসী জোরপূর্বক গণধর্ষণ শেষে তাকে গলাকেটে হত্যা করে।

২২ জুন নড়াইলে সেলিনা সুলতানাকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়।

৫ জুলাই টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। ধর্ষিতা কিশোরী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী।

৫ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুর বাজারে আসে খাতা কিনে বাড়ি ফেরার সময় হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিব, ছাত্রলীগ নেতা আরিফ, সখীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত সিকদারের ভাগ্নে বাবুল, নাতি আকাশ মেয়েটিকে মোটরসাইকেলে করে হাজিপাড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে হাবিব মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় তার সহযোগীরা ধর্ষণের চিত্র ভিডিও করে।

১ আগস্ট বন্ধু দিবসে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বান্ধবীকে ইকোপার্কে নিয়ে ধর্ষণ করে প্রেমিক মোশাররফ।

৩ আগস্ট গঁফরগাওয়ে ভণ্ডপীর আব্দুর রশিদ চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে পাটক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে।

৪ আগস্ট মাগুড়ার শ্রীপুরে মহেশপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী পূর্ণিমা পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কতিপয় যুবক তাকে পাটক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে।



সাতক্ষীরায় মাদ্রাসা ছাত্রী তাহমিনাকে অপহরণ করে ভারতের মুম্বাই শহরের এক পতিতালয়ে নিয়ে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়।

৩১ আগস্ট গোপালগঞ্জে নিজের বাড়িতে ইডেন কলেজের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মিতাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

৩ সেপ্টেম্বর বগুড়ার শাজাহানপুরে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী প্রকৃতির ডাকে বাইরে গেলে বখাটে আলামিন তাকে ধর্ষণ করে। পরে মামলা করতে গেলে যুবলীগ নেতা আবু সাঈদ বাধা দেয়।

২৩ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী লিজাকে ধর্ষণের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ঘাতক সোহেল।

এপ্রিল মাসেই ৫৮ জন নারী ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়ার ঘটনা পত্রিকায় এসেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন তরুণী ইভটিজিং এর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনপুষ্ট বখাটেদের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়।

৪ এপ্রিল কাওসারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৬ এপ্রিল ছাত্রলীগ নেতা বাবু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৪ এপ্রিল টিএসসির বৈশাখী কনসার্টে ছাত্রলীগের মধ্যম সারির নেতাদের হাতে তরুণীদের শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা দেশবাসীকে হতবাক করে।

১৯ এপ্রিল বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেতা ডিউ কর্তৃক এক তরুণী এবং ২৮ এপ্রিল পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ নেতা বরকত খান কর্তৃক স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শারিরীকভাবে নাজেহাল হন।



মে মাসে ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়ার অসংখ্য ঘটনা পত্রিকায় এসেছে। এর মধ্যে কয়েকজন তরুণী ইভটিজিং এর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে।

৩ মে বাগেরহাটের শরণখোলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে যুবলীগ কর্মীরা মারাত্মকভাবে প্রহার করে।

৯ মে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা আঃ কুদ্দুস স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে চুলের মুঠি ধরে লাঠিপেটা করে অজ্ঞান করে ফেলে।জয় বাংলা ! জুয়ান মাইয়া সামলা ! দেশে আছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করতে পারে হামলা !

১৯৭২-৭৫, ১৯৯৬-২০০১ এবং তথাকথিত দিনবদলের কথা বলে পুনরায় ক্ষমতায় আসলেও তাদের ধর্ষণের রেকর্ড পূর্বের সব রেকর্ড কে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে উল্লেখযোগ্য যে জাবির ছাত্রলীগের নেতা মাণিকের ধর্ষণের সেঞ্চুরী। একশন একশন ডাইরেক্ট ধর্ষণ।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তথা পাক হানাদার বাহিনী আমাদের ২ লক্ষ মা-বোন কে ধর্ষণ করে। তাদেরও কারো সাহস হয়নি ভিডিও চিত্রে ধারণ তো দূরে থাকুক স্থির চিত্র ধারণ করা। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যখন যুদ্ধ করছিল তারা কি কখনো ভেবেছিল স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী সোল এজেন্ট আলীগের ছাত্রলীগ বুকের ছাতি ফুলিয়ে বীরদর্পে ভিডিও সহকারে ধর্ষণ করবে? জাতির বিবেকের কাছে এই একটি জ্বলন্ত প্রশ্ন! এভাবেই কি সরকারের বাকী মেয়াদে এ ধরণের নারী নির্যাতন চলতে থাকবে?
  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment